তালাকের পরে স্ত্রী কর্তৃক যৌতুকের মামলায় কি করিবেন । তালাকের পর যৌতুকের মামলা ।

তালাকের পরে স্ত্রী কর্তৃক যৌতুকের মামলায় কি করিবেন । তালাকের পর যৌতুকের মামলা ।

 

তালাকের পরে স্ত্রী কর্তৃক যৌতুকের মামলায় কি করিবেন । তালাকের পর যৌতুকের মামলা । তালাক পরবর্তী মামলা । একতরফা তালাক । যৌতুক মামলা করার নিয়ম । তালাক নোটিশ প্রত্যাহার । নারী নির্যাতন মামলা থেকে বাচার উপায় ।
তালাকের পরে স্ত্রী কর্তৃক যৌতুকের মামলায় কি করিবেন

 

তালাকের পরে স্ত্রী কর্তৃক যৌতুকের মামলায় কি করিবেন । তালাকের পর যৌতুকের মামলা । তালাক পরবর্তী মামলা । একতরফা তালাক । যৌতুক মামলা করার নিয়ম । তালাক নোটিশ প্রত্যাহার । নারী নির্যাতন মামলা থেকে বাচার উপায় ।

 

তালাকের পরে স্ত্রী কর্তৃক যৌতুকের মামলায় কি করিবেন?

স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন, তালাক এর নোটিশ প্রাপ্তির পর আপনার এবং আপনার পরিবারকে শায়েস্তা করিবার জন্য তালাক এর বিষয় গোপন করিয়া থানা অথাবা কোর্টে মিথ্যা মামলা দায়ের করিয়াছে ভাবছেন এখন কি করিবেন, কোথায় যাইবেন, কিভাবে মিথ্যা মামলা থেকে পরিত্রাণ পাইবেন তালাক কিভাবে আপনার রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে

আপনি শুরুতেই মামলার একটি কপিট সংগ্রহের চেষ্টা করুন। যদি এমন হয় যে, আপনি জানিতে পারিলেন না আর হঠাৎ পুলিশ এসে আপনাকে গ্রেফতার করিয়া থানায় নিয়ে গেল, তাহইলে গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আপনাকে আদালতে প্রেরণ করা হইবে। তখন আপনার আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করুন। যদি দলিলপত্র এবং সাক্ষ্যপ্রমাণঠিক থাকে, তাহইলে মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই মিলবে। আর মামলাটি যদি থানায় হয়, তাহইলে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে তালাকের কপিসহ মিথ্যা মামলার ডকুমেন্টসগুলো প্রদান করুন। আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগটির সত্যতা না পেলে আপনাকে নির্দোষ দেখিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করিতে পারেন

আর তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি কাজটি না করে চার্জশীট দাখিল করেন, তাহইলে আপনি বিচারিক আদালতে মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করিতে পারিবেন অব্যাহতির আবেদন কোন কারণে নাকচ হইলে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাইতে পারিবেন মনে রাখিতে হইবে, যদি থানায় মামলা না হয়ে আদালতে সি.আর অথবা পিটিশন মামলা দায়ের হয়, তাহইলে আদালত সমন দিতে পারেন অথবা গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করিতে পারেন এই ক্ষেত্রেও আদালতে একজন আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে পারেন ক্ষেত্র বিশেষে হাইকোর্ট বিভাগ থেকে আগাম জামিন নিতে পারেন

আপনার স্ত্রী কিংবা স্ত্রীর পরিবারের কেউ আপনাকে ক্ষতি সাধনের ইচ্ছায় মিথ্যা যৌতুকের মামলা করেন অথবা মামলা করাইতে সহায়তা করিলে, যিনি মিথ্যা মামলা করেছেন অথবা করিতে সহযোগিতা করিয়াছেন তাহারা প্রত্যেকে ৫(পাঁচ) বছরের কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০(পঞ্চাশ) হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইতে পারেন তবে এই মামলাটি করিতে হইবে যখন আপনি মিথ্যা মামলার দায় থেকে বেকসুর খালাস পাইবেন। তারপর আদালতে আবেদনের মাধ্যমে মামলাটি করিতে হইবে। যৌতুক নিরোধ আইন এর ধারায় এই কথাগুলো স্পষ্ট করে বলা হইয়াছে

মনে রাখিবেন যৌতুকের অভিযোগে যে কেবল স্ত্রীই মামলা করিতে পারিবেন, তা নয়, স্ত্রী যদি আপনার কাছে যৌতুক দাবি করেন, আপনিও স্ত্রীর বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করিতে পারিবেন

এবার জেনে নিই তালাক এর পর আপনার স্ত্রী যৌতুক এর মামলা করিলে সে মামলার ফলাফল কি হইবে। যৌতুক এর অপরাধ প্রমাণ করিতে হইলে ঘটনার তারিখ থেকে এক বৎসর কাল সময়ের মধ্যে যৌতুকের মামলা করিতে হইবে, উক্ত সময় অতিক্রান্তের পর মামলা রুজু করিলে তা সম্পূর্ণ বে-আইনী হইবেফৌজদারী কার্যবিধির ৫৬১() ধারা মোতাবেক বাতিল যোগ্য হইবে। (১৬ বিএলডি, এডি, ১১৮) সেই কারনে তালাক প্রাপ্তির পরে মামলা হইলে বাদীপক্ষ থেকে মামলা প্রমাণ করা মুশকিল হইয়া পড়ে

মনে রাখিবেন দন্ড বিধির ২১১ ধারা মোতাবেক মিথ্যা মামলা করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ, আপনি নির্দোষ প্রমাণিত হইলে মিথ্যা অভিযোগকারী অথবা মামলা দায়েরকারীর বিরুদ্ধে আপনি পাল্টা মামলা করিতে পারিবেন। এছাড়াও দণ্ডবিধির ১৯১ ১৯৩ ধারা মোতাবেক মিথ্যা সাক্ষ্যদানের শাস্তির জন্য সর্বোচ্চ ৭(সাত) বছর কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডের কথা উল্লেখ রহিয়াছে

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১৭ ধারা মোতাবেক মিথ্যা মামলা দায়েরের শাস্তির কথা উল্লেখ আছে। এখানে বলা হইয়াছে যে, যদি কোনো ব্যক্তি কারও ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে এই আইনের অন্য কোনো ধারায় মামলা করিবার জন্য আইনানুগ কারণ না জেনেও মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন বা অভিযোগ করান, তবে সেই অভিযোগকারী অনধিক ৭(সাত) বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। কাজেই তালাকের পর আপনি যদি মিথ্যা মামলার শিকার হয়েই যান, তাহইলে আইন এবং আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রাখিয়া মামলাটি লড়িয়া  যান। বিজয় আপনার অবশ্যাম্ভাবী।

 

Post a Comment

0 Comments