দান করা সম্পত্তি কি ফেরত নেয়া যায়? । হেবা দলিল কি বাতিল করা যায়? ।

দান করা সম্পত্তি কি ফেরত নেয়া যায়?

 

দান করা সম্পত্তি কি ফেরত নেয়া যায়? । হেবা দলিল কি বাতিল করা যায়? । হেবা দলিল বাতিল করার নিয়ম । দানপত্র কাকে করা যায় । দান পত্র দলিল আইন ।  দানপত্র দলিল করার খরচ । হেবা ও দানের মধ্যে পার্থক্য কি? ।

 

দান করা সম্পত্তি কি ফেরত নেয়া যায়?

মনে করুন, কাউকে কিছু দান করিলেন। এখন কি সেই দান আপনি আবার প্রত্যাহার করিয়া নিতে পারিবেন? স্বেচ্ছায় দান সম্পাদন করিবার পরে, সেটি আবার প্রত্যাহার করা আইনে খুবই কঠিন। তবে,  

মুসলিম আইনের ১৬৭ ধারায় দান বাতিল সম্পর্কে বলা হইয়াছে যে, এই ধারার ১ উপধারা মোতাবেক, দখল প্রদানের পূর্বে যে কোনো সময়ে দাতা কর্তৃক হেবা বাতিল করা যাইতে পারে এর কারণ দখল প্রদানের পূর্বে দান আদৌ সম্পূর্ণ হয় না। সুতরাং দান বা হেবা বাতিল করিতে হইলে সেটির দখল অর্পণের পূর্বেই করিতে হইবে। ২ উপধারায় বলা হইয়াছে যে, দখল অর্পণের পরেওপ্রদত্ত দান কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাতিল করা যাইতে পারে, তবে সেইসব ক্ষেত্রে আদালত এর ডিক্রি আবশ্যক। সেই অবস্থাগুলো হইলো যেমন;

ক.স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকেস্ অথবা বামী কর্তৃক স্ত্রীকে যখন কিছু দান করা হয়;  

খ.যখন কোন নিষিদ্ধ সম্পর্কের মধ্যে সম্পর্কিত একজন অন্যকে দান করে ; 

গ.দান গ্রহীতা যখন মারা যাইবে; 

ঘ.যে কোনো কারণেই হোক যখন প্রদত্ত বস্তুর মূল্য বেশি হইবে অথবা এমন ভাবে পরিবর্তিত অথবা রূপান্তরিত হইবে, যে তাহার আসন্ন আকৃতি শনাক্ত করা যাইবে না; 

ঙ.যখন দাতা দান এর বিনিময়ে কিছু গ্রহণ করিবে। 

এইখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, এই অবস্থা গুলোর মধ্যে দখল অর্পণ করা হইয়া গেলে, আদালত এর ডিক্রি ছাড়া দান বাতিল করা যাইবে না।

৩ উপধারায় বলা হইয়াছে যে, দাতা কর্তৃক প্রদত্ত কোনো দান বাতিল করা যাইতে পারে, কিন্তু তার মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারীরা ওই দান বাতিল করিতে পারিবে  না। 

৪ উপধারায় বলা হইয়াছে যে, একবার দখল অর্পিত হইলে আদালত এর ডিক্রি ছাড়া প্রদত্ত দান বাতিল করা যাইবে না। দান বাতিলের জন্য দাতার ঘোষণা কিংবা তা আবার গ্রহণের উদ্দেশে কোনো মামলা করিলে তা দানটি বাতিলের পক্ষে যথেষ্ট বিবেচিত হইবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো ডিক্রি প্রদান করা না হইবে দান গ্রহীতা দানের বিষয় বস্তুটি ব্যবহার ও হস্তান্তর করিতে পারিবে।  

হিন্দু আইন এর দান একবার আইনত সম্পন্ন হইয়া গেলে তা আর বাতিল করা যাইবে না, তবে দান গ্রহীতা যদি প্রতারণা করিয়া কিংবা অবৈধ প্রতিপত্তির মাধ্যমে দানের দলিল অর্জন করে, যদি পাওনাদারকে ঠকানোর উদ্দেশে দান করা হয়, সেই ক্ষেত্রে ওই দান বাতিল বা বাতিলযোগ্য বলিয়া গণ্য হইবে।